www.banglarkontho.net
  • ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

    ভারতকে বদলে দিচ্ছেন মোদি

    ফাইল ছবি
    শেয়ার করুন

    মোদি আধুনিকায়নবাদে বিশ্বাসী। তিনি অতীতকেও মেনে নিতে কার্পণ্য করেন না। তিনি একাধারে ডিজিটাল পেমেন্ট, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির পাশাপাশি কোনো এক হিন্দু দেবতার পুনর্জাগরণের আচারে অংশ নেওয়ার কথাও গর্ব করে বলেন। সেলিব্রিটিদের মতো মোদিও তাঁর নিজের ব্র্যান্ডিং করেন টি-শার্ট পরে, ক্যাপ পরে।

    সাধারণ ভারতীয়দের নজর কাড়তে সৈকত থেকে ময়লা কুড়ান কিংবা রাস্তাও ঝাড়ু দেন। শক্তিধর নেতাদের মধ্যে মোদি ব্যতিক্রম। জো বাইডেন এবং ভ্লাদিমির পুতিন; দুজনেরই প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। দুজনের সঙ্গেই আছে উষ্ণ সম্পর্ক।

    মোদির প্রচারণার স্লোগানে অবশ্য যতই অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির আহ্বান থাকুক না কেন, অনেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু দল মনে করে তারা ভারতীয় জনতা পার্টির কাছ থেকে অবহেলাই কুড়াচ্ছে। মোদির সঙ্গে ভারতের গণমাধ্যমের যে বিতর্কিত সম্পর্ক দেখা যায়, সেটার আংশিক কারণও এই দ্বন্দ্ব। এ কারণে মোদি সহজে মিডিয়াকে সাক্ষাৎকারও দিতে চান না। মোদি ক্ষমতায় আসার পরই বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম সূচকে ভারতের অবস্থান চলে যায় নিচের দিকে।

    মোদি বলেছেন, তিনি রেডিও প্রগ্রাম ‘মন কি বাত’-এ তার ইতিবাচক শক্তিকে মানুষের মাঝে প্রচার করেছেন। রেডিও অনুষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সাধারণ ভারতীয়দের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের কাছে মোদির এই বার্তা পৌঁছানোর কৌশলটিকে জনগণের টাকার শ্রাদ্ধ করা রাজনৈতিক নাটক বলে মনে হতে পারে। তবে তারা যেটা মিস করছেন তা হলো, এ কাজটা কিন্তু ভারতের সহস্র বছরের পুরনো জাতপ্রথায় গড়ে ওঠা সমাজের মানুষগুলোর ওপর দারুণ প্রভাব ফেলছে, যারা কিনা একই সঙ্গে শত বছরের উপনিবেশবাদের শোষণের শিকার এবং কয়েক দশকের নেহরু-গান্ধী পরিবারের শাসনের ভেতর দিয়ে গেছে, যে পরিবারের পশ্চিমা দীক্ষা নেওয়া ক্যারিশমেটিক নেতাদের মোদির অনুসারীরা বাতিল ঘোষণা করেছিল।

    অপরদিকে মোদি দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছেন এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠক হিসেবে বছরের পর বছর দেশের বিভিন্ন এলাকা সফর করেছেন।

    ভারতের ৮০৬টি প্রশাসনিক জেলার প্রায় ৮০ ভাগ জেলার প্রতিটিতে অন্তত এক রাত করে কাটিয়েছেন মোদি।
    ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী হওয়া সহজ। এশিয়ার অর্থনৈতিক বিস্ময়গুলো তখনই ঘটেছিল, যখন কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যা একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেছিল। ওই পর্যায়ে জনগণের মধ্যে নির্ভরশীল-অবসরপ্রাপ্ত ও শিশুদের সংখ্যা ছিল জনসংখ্যার ক্ষুদ্রতম একটি অংশ। জাপান এই পর্যায়ে আসে ১৯৬৪ সালে, চীন আসে ১৯৯৪ সালে। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি ভারতের জন্য ওই অবস্থাটি ২০৩০ সালের আগে আসবে না। এরপর এটি স্থায়ী হবে কমপক্ষে ২৫ বছর।

    গত এক দশকে মোদি ভারতের অবকাঠামো, রাস্তা, সেতু, বন্দর, বিমানবন্দর এবং ডিজিটাল নেটওয়ার্কগুলোয় বিস্ময়কর পরিবর্তন এনেছেন। যে দেশটি একসময় গর্ত, ভেঙে পড়া টার্মিনাল বিল্ডিং এবং গবাদি পশুর কারণে যানজটের জন্য কুখ্যাত ছিল, এখন অনেক দিক দিয়েই বিশ্বসেরার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। শিগগিরই চীন ও ব্রিটেনের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মেট্রো নেটওয়ার্ক হবে ভারতে। এখানকার ৩০ কোটি মানুষ এখন তাৎক্ষণিক অর্থ লেনদেন সিস্টেমের সঙ্গেও যুক্ত।

    মোদির আমলে ভারতের উৎপাদনক্ষমতাও বেড়েছে। বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস বলেছে, পরবর্তী অর্ধশতাব্দীতে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অবকাঠামো বিনিয়োগের হাত ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে। ২০৭৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দ্বিগুণ, চীনের তিন গুণ হলেও ভারতের ১৫ গুণ বাড়বে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

    চীনের চেয়ে ভিন্ন পথে চলার জন্য বিশ্বের এখন ভারতকেই দরকার। বলতে গেলে এ গ্রহের ভবিষ্যৎ ভারতের ওপর নির্ভর করছে। ভারতের এখনকার জিডিপি চীনের ২০০৭ সালের জিডিপির সমান। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও চীন একই সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন উৎপাদনকারী দেশও। বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ কার্বন তৈরি করছে চীন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় তিন গুণ বেশি। আমেরিকার কার্বন নিঃসরণ ক্রমান্বয়ে কমলেও চীনের তা বাড়ছে।

    ভারতও বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী দেশ। উন্নয়নের কক্ষপথ বদলাতে না পারলে বিশ্বের কার্বন-বাজেটের ৩৬ শতাংশই ভারত নষ্ট করে ফেলবে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতের অর্থনীতিতে যে বিনিয়োগ ও নীতিমালার আভাস দেখা যাচ্ছে তাতে গ্রহটিকে বাঁচানোর মতো একটি রূপান্তর চাক্ষুষ করা যাবে। গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের দিকে ভারতে জনপ্রতি কার্বন নিঃসরণ হবে সর্বোচ্চ ২.৭ মেট্রিক টন। ভারতীয়দের কার্বন ফুটপ্রিন্ট এখন থেকে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবস্থানে যাবে। তার পরও ওই সময় ভারতীয়র চেয়ে একজন চীনা ব্যক্তির গড় কার্বন নির্গমনের মাত্রা হবে তিন গুণ বেশি এবং একজন আমেরিকানের হবে পাঁচ গুণ।

    সীমান্ত বিরোধ মেটানোর জন্য মোদি ব্যক্তিগতভাবে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংকে চাপ দিয়েছেন। পাশাপাশি মোদি এখন নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসনও চান। ভারতের জোটনিরপেক্ষ অতীত থেকে বের হয়ে মোদি কোয়াডেও যোগ দিয়েছেন। যেখানে আছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। আর এ জোটের পরোক্ষ উদ্দেশ্যটি হলো ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবেলা করা।

    ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ভারত সরকারের সম্পর্ক ক্ষমতাসীন বিজেপির অধীনে উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০ কোটি মুসলমানসহ ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মোদি নিউজউইককে বলেন, ‘এগুলো কিছু লোকের সাধারণ দল, যারা নিজেদের বলয় ছেড়ে বাইরের লোকদের সঙ্গে মিশতে চায় না। এমনকি ভারতের সংখ্যালঘুরাও তাদের এই অজুহাতে কান দেয় না।’

    ভারতের অনেক মুসলিম, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য অ-হিন্দু গোষ্ঠী অবশ্য ব্যাপারটাকে এভাবে দেখে না। সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি জানেন যে বিজেপি যে সংখ্যাগরিষ্ঠ নীতিতে চলে, তা তাদের নির্বাচনে জেতার জন্য যথেষ্ট। তাঁর মতে, এ নীতির কারণে এমন এক পরিবেশ তৈরি হয়, যা পক্ষান্তরে ভারতের মুসলমানদের ওপর শারীরিক সহিংসতা থেকে শুরু করে মৌলিক নানা অধিকারে বৈষম্য তৈরি করে।

    মোদি সরকারের আরেক ফল্ট লাইন আছে অর্থনীতিতে। ভারতের সরকারি তথ্য দেখায় দেশটির বেকারত্ব মাত্র ৪ শতাংশের নিচে। অনেক অর্থনীতিবিদ একে বলছেন স্রেফ মরীচিকা। এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও জরিপগুলোয় দেখা যায়, মোদি টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন। ১৯৬২ সাল থেকে কোনো ভারতীয় নেতাই এমনটা করে দেখাতে পারেননি।

    এই নির্বাচন ভারতের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। স্বাধীনতার পর কয়েক দশক ধরে ভারতকে নেহরুর আয়নায় দেখা হয়েছিল—ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, এবং জোটবদ্ধ না থাকা একটি দেশ। এই নির্বাচনে বিজয় ভারতকে দেখা যাবে মোদির আয়নায়। যে আয়নাটি গণতান্ত্রিক, জনতাবাদী, টেকনোক্রেটিক এবং নেহরু কল্পনার চেয়েও বিশ্বমঞ্চে অনেক বেশি দৃঢ়, অকপট, হিন্দু ও জাতীয়তাবাদী। ‘নেহরুর জ্যাকেট’ ‘মোদির কোটে’ পরিণত হওয়াটা ছিল এই পরিবর্তনের শুরু মাত্র।

    *নিউজউইকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ

    • সর্বশেষ

    ইসরায়েলি সেনারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে : যুক্তরাষ্ট্র

    এপ্রিল ৩০, ২০২৪ ১১;৫৯ অপরাহ্ণ

    রুশদের থেকে বাঁচতে ১০ কিলোমিটার হাঁটলেন ৯৮ বছরের নারী

    ১১;৫৮ অপরাহ্ণ

    ভোপালে ভোটার টানতে লটারি, হীরার আংটিসহ যত উপহারের ব্যবস্থা

    ১১;৫৭ অপরাহ্ণ

    ৬টি মার্কিন এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসের দাবি মস্কোর

    ১১;৫৫ অপরাহ্ণ

    ইসরায়েলে জার্মান অস্ত্র : জরুরি আদেশ দিলেন না আইসিজে

    ১১;৫২ অপরাহ্ণ

    ইউক্রেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ৪ আহত ৩২

    ১১;৫১ অপরাহ্ণ

    বন্দুক হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তিন সদস্য নিহত

    ১১;৪৯ অপরাহ্ণ

    পশ্চিমবঙ্গে তাপমাত্রা ছাড়াল ৪৫ ডিগ্রি, চার রাজ্যে চূড়ান্ত সতর্কতা

    ১১;৪৭ অপরাহ্ণ

    ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৩৪

    ১১;৪৫ অপরাহ্ণ

    ইউক্রেনে গিয়ে আরো সামরিক সহায়তার আশ্বাস ন্যাটোপ্রধানের

    ১১;৪৩ অপরাহ্ণ

    উপাচার্যকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ শিক্ষক সমিতির

    ৯;৫২ পূর্বাহ্ণ

    স্কুল-মাদরাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হাইকোর্টের নির্দেশ

    ৯;৪৯ পূর্বাহ্ণ

    আইপিএলে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে অবিশ্বাস্য মাইলস্টোন ছুঁলেন ধোনি

    ৯;৪৫ পূর্বাহ্ণ

    চার বছরের প্রেম ভাঙল শ্রুতির

    ৯;৪০ পূর্বাহ্ণ

    শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীরা পড়বেন ব্ল্যাকলিস্টে

    ৯;৩৮ পূর্বাহ্ণ

    হার্ভার্ডে উড়ল ফিলিস্তিনি পতাকা

    ৯;৩৫ পূর্বাহ্ণ

    ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে মিয়ানমার

    ৯;৩৩ পূর্বাহ্ণ

    ট্রুডোর সামনেই খালিস্তানপন্থী‌ স্লোগান, কানাডার রাষ্ট্রদূতকে তলব ভারতের

    ৯;৩১ পূর্বাহ্ণ

    কারাগারেও মাদকের আখড়া

    ৯;২৭ পূর্বাহ্ণ

    আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আজ

    ৯;২৩ পূর্বাহ্ণ

    Copyright Banglar Kontho ©2024

    Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon


    উপরে