বাংলার মানুষের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে মোদি বললেন, ‘আপনাদের ভালবাসা দেখে মনে হয় আমি আগের জন্মে বাংলায় জন্মেছিলাম।’ তীব্র গরমে ভোট প্রচারণায় রাজ্যে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মালদা উত্তরে জনসভা করেন। পাশাপাশি মেদিনীপুর পূর্বে জোড়া জনসভা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দুই জেলায় ভোট রয়েছে তৃতীয় ও ষষ্ঠ ধাপে। এখানে এসেই এমন মন্তব্য করেন মোদি।
গরমের তেজে কার্যত মালদহে জারি হয়েছে তাপপ্রবাহ। চল্লিশের উপর তাপমাত্রা।
কিন্তু, নরেন্দ্র মোদি আসছে শুনে বিজেপি কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উপচে পড়ছিল মাঠ। রোদের তেজের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েক শতাধিক মানুষ। ভিড় দেখে আবেগ প্রবণ হয়ে মোদি বলেছেন, ‘আমার প্রতি আপনাদের উৎসাহ ও প্রেম দেখে আমি আপ্লুত।
আপনারা এত ভালবাসা দিচ্ছেন যে মনে হয় আগের জন্মে আমি বাংলায় জন্মেছিলাম। বা পরের জন্মে আমি বাংলার কোনও মায়ের কোলে জন্মগ্রহণ করব। নয়ত এত ভালবাসা কখনও পেতাম না।’
মোদি আরো বলেন, ‘আমি যদি বাংলায় না জন্মে থাকতাম, তাহলে এত ভালোবাসা নয়ত কখনও পেতাম না। এত লোক আজ আমার এই জনসভায় এসেছেন।
মাঠে জায়গা কুলোচ্ছে না। লোকজন রোদের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছেন। এর জন্য তাঁদের উদ্দেশ্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আপনাদের কথা দিচ্ছি, আপনাদের এই তপস্যা আমি বেকার যেতে দেব না। আমি বাংলায় উন্নতি করে আপনাদের এই ভালোবাসা ফিরিয়ে দেব।’
মোদি আরো বলেন, ‘বাংলা রামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জায়গা। আমি বাংলাকে এই ভাবে পিছিয়ে যেতে দেখতে পারব না। তৃণমূলের মতো দুষ্টু দল থাকার পরও কেন্দ্রের সরকার বাংলার বিকাশের কাজ করে চলেছে। বিজেপি সরকারের প্রকল্পের জন্যই আপনারা ফ্রি রেশন পাচ্ছেন।’
২২ এপ্রিল রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশে চাকরি হারিয়েছে – গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষক এবং অশিক্ষক মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। এ বিষয়ে এদিন মোদির দাবি, শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় মাপের দুর্নীতি করেছে রাজ্যের শাসক দল। যুব সমাজের উন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেছেন, তৃণমূল সরকার বাংলার যুব সমাজের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। এত বড় শিক্ষা দুর্নীতি হয়েছে যে, ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। চাকরি যাওয়ার কারণে ২৬ হাজার পরিবারের রুজিরুটি শেষ হয়ে গিয়েছে। যারা চাকরি পেতে ধারদেনা করে আনা অর্থ তৃণমূলকে দিয়েছিল, সেই ঋণও মানুষের মাথায় চেপে গিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি সরকার যুব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে। এই সরকারকে বাংলার মানুষ মেনে নেবে না বলে দাবি করেন মোদি।
ইতিমধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের রায়কে ‘বেআইনি’ বলে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেছেন, ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি কেড়ে নিয়ে বলছে চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দাও। মগের মুল্লুক নাকি? আমরা মানি না। ইচ্ছা হলেই চাকরি খেয়ে নেওয়া যায় নাকি? এছাড়া মোদি দেশ বেঁচে দিচ্ছে বলেও এদিন দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্র: দ্য ইকোনমিক্স টাইমস, হিন্দুস্তান টাইমস
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon