লেবাননের দক্ষিণে যোদ্ধারা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিন সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পার্লামেন্ট বৃহস্পতিবার দুই বছরের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো পৌরসভা নির্বাচন বিলম্বিত করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে মারাত্মক হামলা চালালে গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধের সূত্রপাত হয়।
সেই হামলার পরদিন থেকে গোষ্ঠীটির মিত্র ইরান সমর্থিত শক্তিশালী হিজবুল্লাহ গ্রুপ সীমান্তের ওপারে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।
লেবাননে প্রতি ছয় বছর পরপর পৌরসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু অর্থসংকটে থাকা কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ ২০১৬ সালে একটি স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর বিরোধিতাকারী আইন প্রণেতাদের আপত্তি সত্ত্বেও সংসদ ‘বিদ্যমান পৌরসভা ও নির্বাচনী কাউন্সিলের ম্যান্ডেটকে ২০২৫ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো’ অনুমোদন করেছে।
বিলটিতে বিলম্বের কারণ হিসেবে ‘লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর জটিল নিরাপত্তা, সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি’কে উল্লেখ করেছে, বিশেষ করে দক্ষিণে সীমান্তের কাছে চলমান উত্তেজনার কথা।
আইন প্রণেতারা নির্বাচনের জন্য একটি নতুন তারিখ নির্ধারণ করেননি। প্রাথমিকভাবে ২০২২ সালে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় কাউন্সিলগুলো বাসিন্দাদের মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
তবে ২০১৯ সালের শেষের দিকে লেবাননের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার পর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে সংকট দেখা যাওয়ায় তাদের ভূমিকা হ্রাস পেয়েছে।
পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি আগে বলেছিলেন, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে কোনো আসন্ন নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। এর আগে হিজবুল্লাহর বিরোধিতা করা প্রধান দল ক্রিশ্চিয়ান লেবানন ফোর্স সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জোর দিয়েছিল।
সহিংসতার কারণে লেবাননে ৯২ হাজারেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সীমান্তের ওপারে ইসরায়েলি সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার বাসিন্দাকেও বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে।
এ ছাড়া ৮ অক্টোবর ইসরায়েলি সীমান্তে সহিংসতা শুরুর পর থেকে লেবাননে কমপক্ষে ৩৮০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৭২ জন বেসামরিক রয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, সীমান্তের পাশে ১১ সেনা ও আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে লেবাননের সংসদ পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত করেছিল। কারণ ডেপুটি স্পিকার সতর্ক করে দিয়েছিলেন, বছরের পর বছর অর্থনৈতিক মন্দার পরে অর্থসংকটে থাকা দেশের জন্য ভোটের আয়োজন ‘প্রায় অসম্ভব’।
লেবানন দীর্ঘস্থায়ী আর্থিক সংকট এবং মাসের পর মাস সীমান্ত সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়েছে। পাশাপাশি প্রেসিডেন্টবিহীন দেশটি সীমিত ক্ষমতাসম্পন্ন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্বে অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে।
সূত্র : এএফপি
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon