যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর শহরের কাছে মঙ্গলবার ভোরে কন্টেইনারবাহী একটি জাহাজ ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুতে আঘাত করলে সেতুটি নদীতে ভেঙ্গে পড়ে। এ ঘটনায় ওই সময় অনেকগুলো যানবাহন পাটাপস্কো নদীতে পড়ে যায়।
এর কয়েক ঘণ্টা পর কোস্ট গার্ড ছয় জনের মৃত্যু হতে পারে বলে জানায়।
মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন এবং এরপর থেকে বাল্টিমোর বন্দর জাহাজ চলাচলের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফেডারেল সরকারের অর্থায়নে সেতুটি পুননির্মাণ ও বন্দর খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
দ্য বাল্টিমোর ব্রিজ, সাধারণ মানুষের মুখে মুখে অবশ্য এটি পরিচিত ছিল ‘দ্য কি ব্রিজ’ নামে। এটি মেরিল্যান্ডের উনিশ শতকের কবি ফ্রান্সিস স্কট কি-র সম্মানে ১৯৭৭ সালে খুলে দেওয়া হয়। তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা।
পাটাপস্কো নদী ও বাল্টিমোর বন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত এই সেতুটি ১ দশমিক ৬ মাইল (২ দশমিক ৬ কি.মি.) লম্বা। এ নদী গিয়ে পড়েছে চেসাপিক উপসাগরে। এটিই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মোহনা।
এ সেতুকে ‘কন্টিনিউয়াস ট্রাস ব্রিজ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়, অর্থাৎ এর উপরের কাঠামোই হলো লোড বহনকারী অংশ এবং এটি একে অপরের সাথে সংযুক্ত ।
এর প্রধান স্প্যানটি ১২শ ফুট লম্বা, যা এ ধরনের যত ব্রিজ আছে দুনিয়ায় তার মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম।
দুর্ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে কন্টেইনার জাহাজ ডালি সেতুটির একটি পিলারে আঘাত করার পর তাৎক্ষনিকভাবেই সেতুটি ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে।
মঙ্গলবার দিনের শুরুতে স্থানীয় সময় রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিলেন এমন আটজনকে তখন সেতুর ওপর দেখা গিয়েছিল। এর মধ্যে দুজন গুয়েতেমালার নাগরিক বলে মেরিল্যান্ডে সে দেশের কনস্যুলেট থেকে জানানো হয়েছে।
সেতুটি ধ্বসে পড়ার পর এই দুজনকে পানি থেকে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হলেও আরেকজনের তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কিন্তু বাকি ছয় জন সম্ভবত প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানিতে কয়েক ঘণ্টা থাকার কারণে প্রাণ হারাতে পারেন বলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ই জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
দিনভর তল্লাশি চালানোর পর অনুসন্ধান কার্যক্রম স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
এখন সংস্থাটি মৃতদেহ খোঁজ করা এবং হতাহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের খুঁজে পেতে শুরুতে উদ্ধারকর্মীরা বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করেছে। কারণ কিছু কার্গোসহ আরও কিছু জিনিস সেতুতে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলো। আবার পানিতেও বিপজ্জনক ধ্বংসাবশেষ ছিলো।
বন্দরের পানির তাপমাত্রা ছিলো ৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা ৪৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মতো।
মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নীচে আসলে হাইফোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। (মানবশরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মতো)।
বাল্টিমোর অগ্নিনির্বাপণ কর্মকর্তারা বলছেন সোনার বা শব্দ সংকেত ব্যবহার করে যানবাহনগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে।
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon