সভ্যতার ইতিহাসে অনেক যুগান্তকারী ভাষণ আছে যা বদলে দিয়েছিল পৃথিবীকে। ইতিহাসে সেসব ভাষণ বর্তমান সময়ের যে কোনো শক্তিশালী অস্ত্রের চেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। আপামর জনসাধারণের মনে দোলা দিয়েছে, দিয়েছে অনুপ্রেরণা। এতে ইতিহাসের বাঁক বদলে গেছে, সৃষ্টি হয়েছে নতুন ইতিহাস। যেমন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর বুকে জন্ম দিয়েছিল স্বাধীন, সার্বভৌম একটি দেশের।
আজ সেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্সের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মাঠে তাঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ভাষণ।
কখন আসবে কবি?/ কখন আসবে কবি?/ শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/ অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।/ তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হৃদয়ে লাগিল দোলা/ জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা/ কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?/ গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;/ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম/ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বিশ্বের সব ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি ছিল অদ্বিতীয় এবং সর্বশ্রেষ্ঠ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করে নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র বাঙালি জাতিতে রূপান্তরিত করেছিল। একাত্তরের এই মাসে সমগ্র বাঙালি জাতি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গর্জে উঠেছে- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ প্রচার দীর্ঘকাল ধরে বিটিভিসহ গণমাধ্যমে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া। আজ এই তিনজনই আস্তাকুড়ে। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে লুপ্ত করতে পারেনি। বরং সেরা ভাষণ হিসেবে ইউনেস্কো বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
নদী অনন্তকাল বহমান, হিমালয় পর্বত কালের রেখায় দণ্ডায়মান। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষণটি প্রকৃতির মতোই পৃথিবীতে যুগ যুগান্তরে সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
সুব্রত তালুকদার।
সম্পাদক,বাংলার কন্ঠ।
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon