স্পোর্টস ডেস্ক : তারকা তো কিলিয়ান এমবাপ্পে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ জিতেই হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর থেকে গত চার বছরে নিজেকে পরিণত করেছেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলারে।
তবে কাতার বিশ্বকাপ যেন এমবাপ্পের জন্য মহাতারকা হওয়ার মঞ্চ। সেই পথে একেকটি ধাপ সফলতার সঙ্গে অতিক্রম করে আসছেন তিনি।
তার জ্বলে ওঠার দিনে ফ্রান্স নিষ্প্রভ থাকবে তা কী করে হয়! আল থুমামা স্টেডিয়ামে পোল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সহজেই কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তিন গোলের দুটি এমবাপ্পে ও অপরটি আসে অলিভিয়ের জিরুদের পা থেকে।
আসরে পাঁচ গোল নিয়ে গোল্ডেন বুট জেতার দৌড়ে শীর্ষে আছেন এমবাপ্পে। এর আগে গ্রুপ পর্বে ডেনমার্কার বিপক্ষে দুটি ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একটি গোল করেন ২৩ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড। গত বিশ্বকাপে চার গোল করেছিলেন তিনি। ২৪ বছর পূরণের আগে সর্বোচ্চ ৭ গোল করার রেকর্ডটি ছিল কিংবদন্তি পেলের। আজ তাকে ছাড়িয়ে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন এমবাপ্পে। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে তার গোলসংখ্যা ৯টি।
অন্যদিকে জিরুদের গোলটি ইতিহাস গড়া। থিয়েরি অঁরিকে টপকে বর্তমানে ফ্রান্সের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের মালিক তিনি। ৫২ গোল নিয়ে এককভাবে শীর্ষে আছেন এই ফরোয়ার্ড। তাতে আরেক ইতিহাসও গড়েন এই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড। বিশ্বকাপ ইতিহাসে নকআউট পর্বে সবচেয়ে বেশি বয়সে গোল করা ফুটবলার তিনি। আজকের গোলটি করেছেন ৩৬ বছর ৬৫ দিন বয়সে।
শেষ ষোলোর তৃতীয় ম্যাচে শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় ফ্রান্স। মরিয়া হয়ে ওঠে গোলের জন্য। ২০ মিনিটের ভেতর আদায় করে নেয় চারটি কর্নার। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপ্পে-দেম্বেলেরা। ১৩ মিনিটে অরেলিয়ে শুয়োমেনির বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন সেজনি। ১৭ মিনিটে উসমান দেম্বলে হতাশ করেন এই গোলরক্ষক। ২০ মিনিটে আবারও গোলমুখে শট নেন শুয়োমেনি। কিন্তু এবারও ব্যর্থ তিনি।
৪৪ মিনিটে অবশেষে ডেডলক ভাঙেন জিরুদ। কিলিয়ান এমবাপ্পের পাস থেকে ডান কোণা দিয়ে বল জালে জড়ান তিনি। গড়েন ইতিহাস! এর ছয় মিনিট আগে ভালো সুযোগ পেয়েছিল পোল্যান্ড। জেলেনস্কির দূরপাল্লার শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকান ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস। ফিরতি শটে গোলমুখে বল পাঠান কামিনস্কি। যা ছিল লরিসের নাগালের বাইরে। তবে রাফায়েল ভারানের কল্যাণে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয় ফ্রান্স।
বিরতির পরও ফরাসি সৌরভ ধরে রাখে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ৭৪ মিনিটে স্কোরশিটে নাম লেখান এমবাপ্পে। বক্সের ভেতর তাকে বলটা বানিয়ে দেন দেম্বেলে। ফাঁকা জায়গায় ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শটে সেজনিকে পরাস্ত করেন তিনি। যোগ করা সময়ে পোল্যান্ডকে বিদায় করার শেষ বন্দোবস্ত করেন এই ফুটবলার। মার্কাস থুরামের বাড়ানো বলটি উচু কর্ণার দিয়ে জালে পাঠিয়ে উৎসবে মাতেন তিনি।
বিদায় প্রায় নিশ্চিত হলেও পরে ব্যবধান কমানোর সুযোগ পায় পোল্যান্ড। বক্সের ভেতর উপামেকানোর হ্যান্ডবল করলে পেনাল্টি উপহার দেওয়া হয় তাদের। স্পটকিক থেকে শট নেওয়া রবের্ত লেভানদোভস্কিকে প্রথমে ঠেকিয়ে দেন লরিস। লাইনের থেকে কিছুটা এগিয়ে এসেছিলেন ফ্রান্স অধিনায়ক। যে কারণে আবারও শট নেওয়ার সুযোগ পান লেভানদোভস্কি। এবার আর মিস করেননি পোলিশ অধিনায়ক। কিন্তু সেই গোল শুধু সান্তনাই এনে দেয় কেবল!
Copyright Banglar Kontho ©2022
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon