দুটি খবর বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন এ সপ্তাহেই ইসরাইলকে যুদ্ধে সহায়তা করার জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করল। পাশাপাশি শুক্রবার গাজায় খাদ্য ও অন্যান্য রিলিফ সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার জন্য প্যালেস্টাইনের সমুদ্র সৈকতে অস্থায়ী পিয়ার নির্মাণ করল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজার অসহায় মানুষদের সাহায্য দেয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু গাজায় সাহায্য নিয়ে প্রবেশের কোনো পথ নেই। আগে যে একমাত্র পথ ছিল মিশরের সীমান্তে তাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সে কারণে গাজার মানুষদের রক্ষার জন্য সমুদ্রপথে সাহায্য প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা। মেরিন কোর পিয়ার নির্মাণ করে। আমেরিকার সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এই খাদ্য সরবরাহ তদারকি করছে। তারা জানিয়েছে শুক্রবার (১৭ মে) থেকে খাদ্য ও রিলিফবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে শুরু করেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট এই খবর দিয়ে বলেছে, ইউএস মিলিটারি নিশ্চিত নয়, গাজায় খাদ্যাভাবে তীব্র কষ্টে দিনাতিপাত করা লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দিতে ইসরাইল বাধা দেবে কিনা। এবং এ বিষয়েও নিশ্চিত নয়, খাদ্য সামগ্রী গাজাবাসীর কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমেরিকার সাথে ইসরাইলের কোনো সমঝোতা হয়েছে কিনা। তবে ভাসমান পিয়ার নির্মাণের সময় থেকেই ভূমধ্যসাগরে বিপুল সংখ্যক খাদ্যবাহী জাহাজ অপেক্ষা করছে।
এর আগে ১৫ মে এসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, বাইডেন প্রশাসন কংগ্রেসকে এই মর্মে জানিয়েছে যে ইসরাইলকে ১ বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র বিক্রির জন্য প্রেসিডেন্ট সবুজ সংকেত দিয়েছেন। ৩ মাস আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরাইলকে প্রতিটি ২,০০০ পাউন্ডের ৩,৫০০টি বোমা পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। এই স্থগিত করার কারণ গাজায় ও রাফাহতে ইসরাইলি বোমা বর্ষণে হাজার হাজার শিশু—নারীসহ নিরস্ত্র জনগণের মৃত্যু। যা পরোক্ষে আমেরিকার ওপর গিয়ে পড়ে। তা সত্ত্বেও তিনি ১ বিলিয়ন ডলারের যে অস্ত্র বিক্রি করছেন ইসরাইলে তার মধ্যে রয়েছে ৬০০ মিলিয়ন ডলারের ট্যাংক, ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ট্যাকটিকেল কনভয় ও ৬০ মিলিয়ন ডলারের মর্টার। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই দ্বিমুখী আচরণে অনেকেই ক্ষুব্ধ। অনেকে মন্তব্য করেছেন বাইডেন সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ছাড়ছেন।
এসোসিয়েটেড প্রেস বলছে ইসরাইলের যুদ্ধকে বাইডেন প্রশাসন যেভাবে হ্যান্ডেল করছেন তাতে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দুই পার্টিরই আইন প্রণেতারা সমালোচনায় মুখর। অন্তত নভেম্বর মাসে তার পুনর্নির্বাচন সামনে রেখে তিনি মোটেও দক্ষতার সাথে এই জটিল বিষয়টি পরিচালনা করতে পারছেন না। নিজ দলের বাইরে আমেরিকার জনগোষ্ঠি ও বিশ্বজুড়ে কেউই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ভূমিকায় খুশি নয়। বিশেষ করে তার এই দ্বিমুখী ভূমিকায়।
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon