নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে হেয় করা নিয়ে আবারও উত্তাপ ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দাবি, অর্মত্য সেন আসল নোবেল পুরস্কার পাননি। প্রখ্যাত এ অর্থনীতিবিদ বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রেখেছেন এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকে।
জানা গেছে, বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের পৈতৃক বাড়ি ‘প্রতীচী’। ১৯৪০ সালে বাড়িটি নির্মাণ করেন তার বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা অধ্যাপক আশুতোষ সেন। কেবল বাড়ির ঠিকানা নয়, তার নানা ক্ষিতিমোহন সেন উপাচার্য ছিলেন বলে বিশ্বভারতীর সঙ্গে অনেকটা নাড়ির যোগাযোগ অমর্ত্য সেনের।
অথচ ২০২০ সাল থেকে সেই বাড়ি নিয়েই চলছে বিবাদ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে অমর্ত্য সেনের পরিবারিক বাড়ি। সে ইস্যুতেই আলোচনার একপর্যায়ে বিশ্বভারতীর ভিসি দাবি করেন অর্মত্য সেনের নোবেল ভুয়া।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, উনি নোবেল প্রাইজ পাননি। উনি নিজেকে দাবি করেন যে উনি নোবেল প্রাইজ পাওয়া। দেখবেন মেডেলেও লেখা আছে ’দিজ অ্যাওয়ার্ড ইজ গিভেন টু সামবডি ইন মেমরি অব আলফ্রেড নোবেল’। অর্থ্যাৎ যারা নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন, রবীন্দ্রনাথেরটা দেখে আসেন ওখানে এমবুশ করা তার মুখটা আছে। কিন্তু নোবেল প্রাইজ যারা ইকোনোমিকসে পান, তাদের লেখা হয় ‘ইন মেমরি অব আলফ্রেড নোবেল’।
ভিসি’র এমন মন্তব্যে তোলপাড় পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৃণমুল কংগ্রেসের নেতারা। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, আসলে ইনি পাগল। ইনাকে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্যের উচিত এক্ষুণি এখান থেকে তাড়িয়ে দেয়া। ভারতবর্ষের গর্ব অমর্ত্য সেন। তার সম্পর্কে এই যে কথা বলা এটা উনাকে অপমান করছে না; ভারতবাসীকে অপমান করছে, বাঙলাকে অপমান করছে।
যদিও নোবেল বিতর্ক বা জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই ৯০ বছর বয়সী অমর্ত্য সেনের। তিনি বলেন, যে কোনো বিষয়ে কথা বাড়াতে চাইলে বাড়ানো যায়। এমন লোক যদি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় আসেন, যিনি সত্য মিথ্যার তফাৎ করতে পারেন না তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা কেন এরকম, এতটা খারাপ; এনিয়ে আমাদের আলোচনা করার অবকাশ খুব কম।
উল্লেখ্য, বিশ্বমঞ্চে বাঙালি পরিচয়কে যে ক’জন অনন্য উচ্চতায় নিয়েছেন, তাদের মধ্যে অনন্য অমর্ত্য সেন। হার্ভার্ড, ক্যামব্রিজের মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করা অর্থনীতিবিদ, কাজ করেছেন দারিদ্র দূরীকরণের উপায় নিয়ে। স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৮ সালে পান নোবেল পুরস্কার।
Copyright Banglar Kontho ©2022
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon