জার্মানির শক্তিশালী ‘লেপার্ড ২’ ট্যাংক পাওয়ার নিশ্চয়তা পাওয়ার দিন বুধবার দোনেত্স্ক অঞ্চলের সোলেদার থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে কিয়েভ।
ট্যাংক পাওয়া নিয়ে ইতিবাচক খবর আসার পর ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সোলেদার থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা জানায়।
কিছুদিন আগে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা দল ‘ওয়াগনার গ্রুপ’ দাবি করেছিল, তারা সোলেদার এলাকায় দখল প্রতিষ্ঠা করেছে। পরে রাশিয়াও এ দাবি করে। ইউক্রেন ওই সময় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা ‘সাসপিলনে’ জানায়, সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি সোলেদার থেকে সেনা প্রত্যাহারের খবর নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে দীর্ঘ অনীহার পর বুধবারই ইউরোপের প্রভাবশালী দেশ জার্মানি ‘লেপার্ড ২’ ট্যাংক ইউক্রেনকে সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়। দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ জানান, ট্যাংক চালাতে ইউক্রেন সেনাদের প্রশিক্ষণ শিগগিরই শুরু হবে।
এ বিষয়ে জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টিফেন হেবেস্ট্রেইট জানান, ইউক্রেনকে ১৪টি ‘লেপার্ড ২এ৬’ ট্যাংক সরবরাহ করা হবে।
এদিকে মার্কিন গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রও প্রাথমিক অনীহার পর ইউক্রেনকে ‘এম১ আব্রামস’ ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে। তবে এ জন্য কিছুটা সময় লাগতে পারে। ওয়াশিংটন ৩০টির মতো ট্যাংক সরবরাহ করতে পারে।
বুধবার ছিল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির জন্মদিন। এদিনই ইউক্রেন পশ্চিমাদের কার্যকর যুদ্ধাস্ত্র হাতে পাওয়ার সুসংবাদ পাওয়ার পাশাপাশি সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ হারানোর দুঃসংবাদ পেল।
ইউক্রেনকে ট্যাংক সরবরাহ করা নিয়ে অচলাবস্থা কেটে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর বুধবার পশ্চিমা বিশ্ব ছিল উত্ফুল্ল। যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়াসহ অন্যান্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা জার্মানিকে ধন্যবাদ জানান।
জার্মানির ইউক্রেনে ট্যাংক সরবরাহ করা নিয়ে দ্বিধা তৈরি হওয়ায় অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্রের মধ্যে দোলাচল শুরু হয়েছিল। সেই অনিশ্চয়তা এবার কাটল। এখন ইউরোপের অনেক দেশ থেকে ইউক্রেনে ট্যাংক যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা অনেকটাই দূর হলো। জার্মান সরকার এরই মধ্যে জানিয়েছে, ইউক্রেনকে তৃতীয় কোনো দেশ তাদের তৈরি লেপার্ড ২ ট্যাংক পাঠাতে চাইলে তা অনুমোদন করা হবে।
পশ্চিমা বিশ্বের ট্যাংক সরবরাহ করা নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এরই মধ্যে বলেছেন, ‘বাকিগুলোর মতোই এসব ট্যাংকও জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।’ জার্মানিকে সতর্ক করে পেসকভ আরো বলেছিলেন, ‘ট্যাংক সরবরাহ মস্কো ও বার্লিনের মধ্যে ইতিবাচক কিছু আনবে না। এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি স্থায়ী পদচিহ্ন রেখে যাবে।’
পশ্চিমা পরাশক্তিদের মধ্যে যুক্তরাজ্য প্রথম ইউক্রেনকে ‘চ্যালেঞ্জার ২’ ট্যাংক পাঠাতে সম্মত হয়। এর ধারাবাহিকতায় ফ্রান্সও তাদের ট্যাংক পাঠানোর কথা জানায়। এর ফলে জার্মানি ন্যাটোভুক্ত অন্য সদস্যসহ পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে চাপে পড়ে যায়। বুধবার জার্মানির মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের ভেতর থেকেও কিয়েভকে ট্যাংক সরবরাহের চাপ তৈরি হয়।
সূত্র: ডয়চে ভেলে, বিবিসি, গার্ডিয়ান
Copyright Banglar Kontho ©2022
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon