আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রো নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৭৬ বছর বয়সী হিকম্যান ১৯৬৪ সালে ‘দ্য ল ফর মোটরিস্ট’ শীর্ষক বইটি ধার নিয়েছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর। একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ার পর নিজেকে উজ্জীবিত করার আশায় বইটি পড়তে নিয়েছিলেন তিনি। শহরের মেয়র ডব্লিউজিকে গ্রিফিথের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ বাধিয়েছিলেন হিকম্যান। স্থানীয় ডুডলি হাইস্কুলের মেয়েরা ওই সময় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। তাদের দিকে হাত নাড়িয়ে হিরোইজম দেখাতে গিয়েই মেয়রের গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে বসেন তিনি।
ওই ঘটনার পর হিকম্যান আইনি বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং লাইব্রেরির বইটি অনেকটা আলসেমি করে ফেরত দেয়ার কথা ভাবেননি। বইটি ড্রয়ারেই পড়ে ছিল।
আরও পড়ুন: অর্থ নিয়ে মিথ্যাচার করায় য়্যুভেন্তাসকে ১৫ পয়েন্ট জরিমানা
হিকম্যান পরে লন্ডনে স্থানান্তরিত হন এবং বইটি ফেরত দিতে সম্পূর্ণ অবহেলা করেন। এখন তার বয়স ৭৬ বছর। তবে গত সপ্তাহে বইটি ফেরত দিতে তিনি নিজ শহরে ফিরে গিয়েছিলেন। লাইব্রেরিয়ানরা ডেভিডকে প্রতিদিন ২০ পেন্স জরিমানা হিসাব করে দেখান, বইটির জন্য মোট দণ্ড ৪২ হাজার ৩৪০ পাউন্ড বা ৫৫ লাখ ৪১ হাজার ২০২ টাকা। অবশ্য লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ হিকম্যানের জীবনের গল্প শুনে অভিভূত হয়ে তার জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছেন।
এ নিয়ে এক্সপ্রেস এবং স্টার পত্রিকাকে অবসরপ্রাপ্ত হোটেল ম্যানেজমেন্ট পেশার হিকম্যান বলেন, ‘আমার গাড়িটি ছিল ১৯৪৭ সালের ফোর্ড পপুলার। সেই দিনগুলোতে আপনার এমন একটি গাড়ি থাকা মানে মেয়েদের মনোযোগ আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে আপনি শীর্ষে থাকবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্কুল থেকে ফেরা মেয়েদের দিকে হাত নাড়ছিলাম। আমার গাড়িটি যে কখন রাস্তার মাঝখানে চলে গিয়েছিল আমি টের-ই পাইনি। হঠাৎ মেয়রের গাড়ি দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। পরে নিজের পক্ষে কোনো যুক্তি দাঁড় করানো যায় কি না, সেই আশায় লাইব্রেরি থেকে বইটি ধার নিয়েছিলাম।’
আরও পড়ুন: চলন্ত গাড়িতে সিটবেল্ট না বাঁধায় ঋষি সুনাকের জরিমানা
হিকম্যান বলেন, ‘আমি আদালতে যাচ্ছি দেখে আমার মা তখন খুব রাগ করেছিলেন। লোকজন তখন কর্তৃপক্ষের আদেশ মানার বিষয়ে খুব সচেতন ছিলেন। এমনকি আমি সেই দিনের সংবাদপত্রগুলো লুকিয়ে রেখেছিলাম যাতে মা এটি দেখতে না পান। লাইব্রেরির বইটিও সরিয়ে ফেলেছিলাম। বছরের পর বছর ধরে বইটি ড্রয়ারের পেছনে ছিল।’
পরে বইটি খুঁজে পেয়ে ব্যক্তিগতভাবে এটি ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন হিকম্যান। ডুডলি লাইব্রেরিয়ান শ্যারন হোয়াইটহাউস বলেছেন, ‘আমরা বইটি ফেরত পেয়ে, এর পেছনের গল্প শুনে রোমাঞ্চিত। আমরা এটি ব্ল্যাক কান্ট্রি মিউজিয়ামে দান করার পরিকল্পনা করছি।’
Copyright Banglar Kontho ©2024
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon