সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়নের পাঙ্গাসিয়া হাওরের উঁচু এলাকায় সেচের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে অনাবাদি রয়েছে বেশ কিছু জমি। পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেননা কৃষকরা। ফলে অনেক জমি ফেটে চৌঁচির হয়েগেছে। মৌসুমের শুরুতেই হাওরের সেচের পানির এমন সঙ্কটে দিশেহারা আমড়িয়া, কান্দাগাঁও, রুপাবালি, খিদিরপুরসহ ৪ গ্রামের কৃষক ।
কৃষকরা বলছেন হাওরের পানি ধারণেরে অন্যতম জলাশয় ভান্ডা হাজিরা বিলের ছাতল জলমহালটি অসমেয় শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করায় পানি সেচের কৃত্রিম এই সংকট দেখা দিয়েছে। একটি স্বার্থন্¦েসী মহল প্রভাব বিস্তার করে স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির নাম ব্যবহার করে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধ পন্থায় জলমহাল শাসন করায় সাধারণ কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
শনিবার সরেজমিনে পাঙ্গাসিয়া হাওরে গেলে দেখা যায়, পাঙ্গাসিয়া হাওরে আমড়িয়া, কান্দাগাঁও, রুপাবালি, খিদিরপুরের উঁচু এলাকার বেশ কিছু জমি পানির অভাবে অনাবাদি রয়েছে। যেসকল জমি চাষের আওতায় এসেছে সেগুলোতে পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। চারা রোপণের পরে সেচ না দেয়ায় অনেক জমি ফেটে চৌঁচির হয়েগেছে। বিকল্প সেচের ব্যবস্থা না থাকায় দুশ্চিন্তায় স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, হাওরের উঁচু অংশে জমিতে সেচ দিতে পঞ্চায়েতের টাকায় বাঁধ তৈরী করে ভান্ডা হাজিরা বিলের ছাতল জলমহালে পানি আটকানো হয় যারেত সময়মতো পানি সেচ দিতে পারেন কৃষকরা। দীর্ঘদিন যাবত এমনিভাবে সেচের ব্যবস্থা করে আসছেন এলাকবাসী। কিন্তু চলতি মৌসুমে বিলের ইজারদার অধিক মুনাফা লাভের কার্তিক মাসের শুরুতেই বিলের পানি সেচে মাছ ধরতে শুরু করে। ফলে ধীরে হাওরের উঁচুর অংশে পানি শুকিয়ে যায়। কিছুদিন পূর্বে সেলুমেশিন দিয়ে পানি শুকিয়ে মাছ ধরেন জলমহালের ভাগিনামা মূল্যে ইজারাদার জাহির আলী। কৃষদের এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সরেজমিনে গিয়ে ছাতল বিলে পানির কোনো অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি।
আমড়িয়া গ্রামের কৃষক বলেন, বনছাতল বিলের পানি শুকিয়ে মাছ ধরার কারনে হাওর শুকিয়ে গেছে। আমি ৫ কেয়ার জমি চাষাবাদ করতে পারিনি।জমি না করায় সামনের দিনগুলি অভাবে থাকতে হবে।
আফজ উদ্দিন বলেন, আমাদের বাপদাদার আমল থেকে ছাতল বিলের পানি দিয়ে হাওরের জমি চাষাবাদ করে আসছি। এবার বিলের মালিকরা কার্তিক অগ্রাহয়ন মাসেই বিলের পানি ছেড়ে দিছেন। এখন পানির অভাবে মানুষ কষ্ট করের।
ইউপি সদস্য ফয়জুর রহমান বলেন, এই হাওরে উঁচু অংশ বনছাতল বিলের পানি ও নিচু অংশ পাঙ্গাসিয়া খারার পানি দিয়ে চাষাবাদ করেন। পাঙ্গাসিয়া খারায় পানি থাকলেও বন ছাতলে কোনো পানি নেই। এর জন্য বিলের ইজারাদারই দায়ি।
বিল শুকিয়ে মাছ ধরার ব্যাপারে জাহির আলী বলেন, বিল আমি আমড়িয়া কান্দাগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির কাছ থেকে কিনে নিয়ে এনেছি। আমি কেবল মাছ ধরেছি। পানি আমি শুকাইনি। বিলের পানি কৃষকরা তুলে নিয়ে গেছেন।
কৃষি অফিসার জাহিদ হাসান বলেন, বনছাতল বিল শুকিয়ে মাছ ধরার কারনে হাওরের উঁচু এলাকায় তীব্র পানির সংকট দেখা দিয়েছে । এ বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলছেন বলে জানান তিনি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার উজ জামান বলেন, পাঙ্গাসিয়া হাওরে নিচু অংশে পানি রয়েছে সেখানে সেচ সমস্যা নেই। তবে উঁচু অংশের সেচ সমস্যার নিরসনে বিকল্প ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এস এ
Copyright Banglar Kontho ©2022
Design and developed by Md Sajibul Alom Sajon